বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চলছে।’ আমি বলব, ঘোলা পানিতে না। আপনাকে প্রকাশ্যে রাজপথে মানুষ মোকাবিলা করবে। তারা এখন ঐক্যবদ্ধ ও সংঘবদ্ধ। তাদের উদ্বেল অভিযাত্রায় মিছিলে মিছিলে আপনার পদত্যাগের ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে। আপনি বরং আপনার প্রাসাদে কাসিমবাজার কুঠি নির্মাণ করেছেন। আপনি সেখানে বসে বিশ্বাসঘাতক ঘষেটি বেগমের ভূমিকা পালন করছেন। আপনি দেশের স্বাধীনতা, গণতন্ত্রকে হরণ করেছেন। আপনার বিরুদ্ধে মানুষ প্রকাশ্যে মিছিলে স্লোগান দিচ্ছে। সেজন্যই মসনদকে উল্টে পড়া থেকে শেষবারের মতো ধরে রাখার চক্রান্ত করছেন।’
রাজধানীর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহিলা দল আয়োজিত বিক্ষোভপরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তানি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ হয়। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহম্মেদের পরিচালনায় এসময় মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, নায়াবা ইউসুফ, শাহিনুর নার্গিস, মিসেস শামীমা রাহিমসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা তারেক রহমান দম্পতির বিরুদ্ধে পরোয়ানা প্রত্যাহারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রিজভী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, ‘অন্যায় ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা দেশনায়ক তারেক রহমানের নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া হয়েছে। যিনি অনেক দূরে থেকে গোটা জাতিকে সুসংগঠিত করেছেন। সেই নেতাকে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করেছেন শেখ হাসিনা। শুধু তাঁকে নয়, এই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে কত নিষ্ঠুর ও কত অমানবিক তার উদাহরণ হলো দেশনায়ক তারেক রহমানের সঙ্গে তাঁর সহধর্মিণী যিনি রাজনীতির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। তার নামেও মিথ্যা ও চক্রান্তমূলক মামলা দিয়েছেন। কেন দিয়েছেন সেটা তিনিই জানেন। এই মামলা চক্রান্তমূলক ও মিথ্যা। জনদৃষ্টিকে ভিন্নদিকে নেওয়ার মামলা। মসনদকে উল্টে পড়া থেকে শেষবারের মতো ধরে রাখার চক্রান্ত। কিন্তু এবার জনগণ চূড়ান্ত আঘাত হানবে। তারা আপনার সিংহাসন ধরে টান দিবে।’
রিজভী বলেন, ‘আজকে আমাদের সমাবেশ ঠেকাতে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে লেলিয়ে দিয়েছেন। বিএনপির সমাবেশে যাতে লোকজন না হয়। বিএনপি ও লোকজনকে আঘাত করার জন্য। তারপরও মানুষ পায়ে হেঁটে, নদী সাঁতরে, সাইকেল নিয়ে চিড়া-মুড়ি বেধে নছিমন-করিমন-ভটভটিতে করে জনগণ সমাবেশে যাচ্ছে। তিনি বাস বন্ধ করে দিলেন, অন্য যানবাহন বন্ধ করেও বিএনপির জনসভায় এত লোক হচ্ছে কেন? ৬৫ কিলোমিটার পথ হেঁটে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বাগেরহাটের একজন। মোস্তাফিজুর রহমান সোহেল অসুস্থ অবস্থায় রংপুরের সমাবেশে স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এসব দেখে শেখ হাসিনা ভাবছেন, তিনি তো নড়বড়ে সিংহাসনে বসে আছেন। বিদেশি প্রভু ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে সেই চেয়ারের চারটি খুঁটি ধরে রেখেছেন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, “পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ‘মানুষের হাতে টাকা নেই’, তো টাকা গেলো কোথায়? রিজার্ভ তলানিতে কেন। চাল-ডাল, আটা, তেল কিনতে ডলার নেই কেন? এই ডলার গেল কোথায়। আমরা যদি আপনাদের লোকের পকেট ও ভ্যানিটি ব্যাগ হাতড়াই তাহলে ডলার মিলবে। সামিট গ্রুপকে কত টাকা ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়েছেন। এই সংকটের দিকে কে ঠেলে দিয়েছে? আপনি দিয়েছেন। কারণ আপনার দেশের প্রতি দরদ নেই। আপনার দরদ ছাত্রলীগ-যুবলীগ আর আপনার স্বজনদের প্রতি। তা না হলে তো গণভবনের পুকুরে চিতল মাছ ধরে নিজের বোনকে দেখাচ্ছেন যে দেশে কোনো সংকট নেই। সেই মাছ খেয়ে কাটা ফেলে দিবেন রিকশাওয়ালার দিকে। এই হচ্ছে আপনার মানসিকতা।’