‘বোলিং আমাদের মূল শক্তি। শুধু দরকার কিছু রান।’
কাল আইসিসি প্রিভিউয়ে কথাটা বেশ আত্মবিশ্বাসের সুরে বলেছিলেন পল ফন মিকেরেন। নেদারল্যান্ডসের এই পেসারের কথা শুনেই হয়তো আজ ডাচ ব্যাটসম্যানরা জ্বলে উঠেছেন। অ্যাডিলেড ওভালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৪ উইকেটে ১৫৮ রান করেছে স্কট এডওয়ার্ডসের দল।
যা তাড়া করতে নেমে বারবার হোঁচট খেয়েছে প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়া ইনিংস থেমেছে ৮ উইকেটে ১৪৫ রানে। ১৩ রানের ঐতিহাসিক জয় নিয়ে অ্যাডিলেডে উল্লাসে মাতে ডাচরা। আর বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ার হতাশায় থমথমে মুখশ্রী দেখা যাচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ডাগআউটে।
মুহূর্তটি মাঠে বসেই দেখেছে একই গ্রুপের দল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। একই মাঠে পরের ম্যাচে যে আজ এই দুই দল মুখোমুখি। সে ম্যাচে যে জিতবে তাঁরা গ্রুপ ২ থেকে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেবে। দক্ষিণ আফ্রিকার হারে গ্রুপ ২ এর প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত।
দক্ষিণ আফ্রিকার রান তাড়ার শুরু থেকেই সেরা ছন্দে ছিল না। পাওয়ার প্লেতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে তাঁরা পিছিয়ে পড়ে, রান এসেছে ৩৯। ভালো শুরুর পরও কুইন্টন ডি ককের ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি ফ্রেড ক্লাসেন। ১৩ বল খেলে ১৩ রানে থামে ডি ককের ইনিংস। পাওয়ার প্লের শেষ বলে এসে ফন মিকেরেনের শিকার প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।
উইকেট পতনের এই ধারা বজায় ছিল ইনিংসজুড়েই। দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো জুটিই ৩০ এর ঘরে যেতে পারেনি করেনি। নেদারল্যান্ডস উইকেট নিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সেটাও বোলারদের চাতুর্যের সৌজন্যে। অ্যাডিলেডের এক পাশের বড় বাউন্ডারিতে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যানদের মারতে বাধ্য করেন তাঁরা। উইকেটও ধরা দেয় তাতে। রাইলি রুশো যেমন ব্রেন্ডন গ্লোভারের বলে মারতে গিয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ আউট হন।
তখনো অবশ্য প্রোটিয়াদের বড় ক্ষতি হয়নি। এইডেন মার্করাম ও ডেভিড মিলার তাদের ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেছিলেন। কিন্তু ১৩তম ওভারে ফ্রেড ক্লাসেন এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন ১৩ বলে ১৭ রান করা মার্করামকে আউট করে। তিনি ৪ ওভার শেষ করেন ২০ রানে ২ উইকেট নিয়ে। তখনো মনে হয়নি অ্যাডিলেডে আজ অঘটন ঘটতে যাচ্ছে।
কারণ মিলারের সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হাইনরিশ ক্লাসেনের জুটির শুরুটা খারাপ হয়নি। কিন্তু গ্লোভারের করা ১৬তম ওভারে ম্যাচের ছবিটা পাল্টে যায়। একই ওভারে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বশেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যানকে আউট করলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে থাকে নেদারল্যান্ডস।
চোট নিয়ে লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যান মহারাজ একটি ছক্কায় ১২ বলে ১৩ রান করে অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলার আভাস দিলেও শেষ পর্যন্ত স্নায়ুর চাপটা ভালো সামলেছেন নেদারল্যান্ডসের ডেথ বোলিং বিশেষজ্ঞ বাস ডি লিডি। ১৮ ও ২০তম ওভার করে নেদারল্যান্ডসের ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। গ্লোভার ২ ওভারে ৯ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট শিকার করেছেন। ডি লিডির শিকার ৩ ওভারে ২৫ রানে ২ উইকেট।