তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও বিবিসি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েক হাজার মানুষ। অনেকে এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন। তাদেরকে উদ্ধার অভিযান চলছে।
এরই মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনেও আসতে শুরু করেছে দুঃসংবাদ। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্কে সবধরণের খেলা স্থগিত করেছে দেশটির সরকার। ধ্বংসস্তুপে আটকা পড়েছেন অনেক খেলোয়াড়। তুরস্কের ভয়াবহ বিপর্যয়ে সমবেদনা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি, উয়েফাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থা।
ভূমিকম্পে তুর্কির ক্লাবে খেলা ঘানার ফুটবলার ক্রিস্টিয়ান আতসু আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া চেলসি ও নিউক্যাসেলের সাবেক এ ফুটবলার বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল। তিনি তুর্কির ক্লাব হাতায়স্পরে খেলেন।
পর্তুগিজ স্পোর্টস সাইট ‘এ বোলা’র বরাতে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ভূমিকম্পের ঘটনায় ৩১ বছর বয়সী ঘানার ওই ফুটবলার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়ে। পরে জরুরি উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে। তার শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় এবং ডান পায়ে আঘাত পাওয়ায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তবে আতসুর ক্লাব হাতায়স্পরের সভাপতি তুর্কি সাংবাদিক ইয়াগিজ সাবুনচোগলুকে জানিয়েছেন, আতসুকে এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। শুধু আতসুই নন, ক্লাবের ক্লাবটির ডিরেক্টর তানের সাভুতও নিখোঁজ।
ভুমিকম্পে নিখোজ রয়েছেন তুর্কি ফুটবলার ইয়ুপ তারকাসলান। তুর্কি সংবাদমাধ্যমের খবর, ধ্বংসস্তূপ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এমন খবর নাকচ করে দিয়েছেন মালাতয়াসপোরের সভাপতি হাচি ইয়ামান। তিনি জানিয়েছেন, তারকাসলানকে খোঁজার প্রক্রিয়া এখনো চলমান আছে। আমরা আশা করছি ভালো খবর পাবো।’
এদিকে তুরস্কের আন্তর্জাতিক এবং হাতায়স্পোর ম্যানেজার ভলকান ডেমিরেল তার দেশকে সাহায্য করতে বিশ্বকে অনুরোধ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক ভিডিওবার্তায় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
তুরস্কের হয়ে ৬৩টি ম্যাচ খেলা ডেমিরেল তার বার্তায় বলেন, ‘সাহায্য করুন, যার কাছে যা আছে তা দিয়ে সাহায্য করুন। তুরস্কের এই দুর্যোগের সময় দয়া করে সবাই এগিয়ে আসুন।’
শুধু ফুটবলারই নন, ভূমিকম্পে তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী ভলিবল দলের ১৪ খেলোয়াড় ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকা পড়েছেন। খোঁজ মিলছে না একটি স্কুল দলেরও। ভূমিকম্পের পর এখনও সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না তাদের পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে ধ্বসে পড়া গ্র্যান্ড ইসিয়াস হোটেলের ধ্বংসস্তুপে আটকে থাকতে পারেন তারা।
এছাড়া কাহরামানমারাস প্রদেশে একটি রেসলিং ক্লাবের ৩০-৪০ জন রেসলারও নিখোঁজ রয়েছেন। তারাও ধ্বংসস্তূপের নিচে গেছে। ২০১৬ অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন কুস্তিগির তাহা আকগুল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের একটি পোস্টে এটি ঘোষণা করেছেন।
তুরস্ক-সিরিয়ায় এই ভূমিকম্পে দেশটিতে সাত দিনের শোক ঘোষণা করা হয়েছে এবং সমস্ত ক্রীড়া ইভেন্ট স্থগিত করা হয়েছে।