বিশ্বে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকা শহরগুলোর মধ্যে রাজধানী ঢাকা অন্যতম। আর্থ অবজারভেশন সেন্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইন্ডিয়ান, ইউরেশিয়ান ও মিয়ানমার, এই তিনটি প্লেটের সংযোগস্থলে বাংলাদেশের অবস্থান। যার ফলে এ অঞ্চলে বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। খবর বিবিসি বাংলার।
ঘনবসতিপূর্ণ শহরটির ঝুঁকি কমাতে এ পর্যন্ত বিভিন্ন প্রকল্প ও পরিকল্পনা নেয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। প্রতিবারই বড় কোনো ভূমিকম্প হওয়ার পর ব্যাপক তৎপরতা দেখা যায়, যা ধামাচাপা পড়ে বড় ধরনের আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানার আগ পর্যন্ত।
পুরান ঢাকায় গেলে দেখা যাবে, এখনো গায়ে গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে রয়েছে অসংখ্য ভবন। সর্বোচ্চ তিনতলা গাঁথুনি যে ভবনটির, সেখানে নির্দ্বিধায় তোলা হচ্ছে ৫ তলা-৬ তলা।
জগন্নাথপাড়া এলাকায় ৩০০ থেকে ৪০০ বর্গফুট জায়গায় একটি পাঁচতলা বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এর বিভিন্ন তলায় বসবাস করছেন এক পরিবারের অন্তত ১৫ জন সদস্য। শুক্রবার ভোররাতের ভূমিকম্পে এই ভবনটি কেঁপে উঠলে ভীষণ আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এই এলাকার মানুষ। কিন্তু তাদের কারোরই ভবনের নিচে রাস্তায় ঠাঁই নেওয়ার জায়গাটুকু নেই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ূন আক্তার বলেন, সাধারণত প্রতি ১০০ বছর পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। সবশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। সে হিসাবে আরেকটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে সমন্বিত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচি-সিডিএমপি ও জাইকার যৌথ জরিপে জানা গেছে, ঢাকায় সাত বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হলে শহরের ৭২ হাজার ভবন ভেঙে পড়বে এবং এক লাখ ৩৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তৈরি হবে সাত কোটি টন কংক্রিটের স্তূপ।
এ ব্যাপারে প্রকৌশলী মেহেদী আহমেদ আনসারি জানান, ঢাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভূমিকম্পে দুর্যোগের ঝুঁকি।