রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের দেয়া নিষেধাজ্ঞার কারণে বাংলাদেশসহ গোটা গ্লোবাল সাউথ (বৈশ্বিক দক্ষিণ) আক্রান্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর যে সব দেশ এসব নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু করেছে তারা কখনো ঢাকার সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পরামর্শ করেনি। অথচ এ কারণে বিশ্বজুড়ে যে সব দেশে অর্থনৈতিক পতন ‘সব থেকে কঠিন আঘাত হেনেছে’ বাংলাদেশ তার অন্যতম। বুধবার জি-২০ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিতে ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লি পৌঁছানোর কয়েক ঘণ্টা পর দ্য হিন্দুর সঙ্গে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পুনর্ব্যক্ত করেন যে, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উভয় স্তরে সংলাপের উন্মুক্ত চ্যানেল চালু করার জরুরি প্রয়োজন ছিল, যাতে করে সমসাময়িক বিশ্বব্যবস্থার অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বল্পোন্নত দেশগুলো একা না হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে আছি। কিন্তু তারা এ বিষয়ে আমাদের মতামত জানতে চায়নি। এমনকি তারা (প্রধান পশ্চিমা অর্থনীতিগুলো) কোনো পর্যায়ে আমাদের সঙ্গে পরামর্শও করেনি। তাই আমরা জি-২০ সম্মেলনে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো যে সব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তা উত্থাপন করতে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, এই সম্মেলনে ৯টি অতিথি দেশের মধ্যে একটি বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন দ্য হিন্দুকে জানান, গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোতে পণ্য সংকট এবং জ্বালানি নিরাপত্তাহীনতার মতো অর্থনৈতিক সমস্যা বেড়েছে। এই সংকট মোকাবিলায় একটি যৌথ কৌশল প্রণয়নে নয়া দিল্লির সঙ্গে আলোচনা করছে শেখ হাসিনার সরকার। তিনি বলেন, আমরা ভারতকে গ্লোবাল সাউথে আমাদের নেতা হওয়ার জন্য বলছি, যাতে আমরা আমাদের কণ্ঠস্বরকে প্রসারিত করতে পারি এবং পশ্চিমকে আমাদের উদ্বেগের কথা শোনাতে পারি। তিনি যুক্ত করেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক কোম্পানি প্রচুর মুনাফা করছে। আমরা চাই যুদ্ধ থেকে লাভবান হওয়া এসব কোম্পানি তাদের মুনাফার একাংশ গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে ভাগ করে নেবেন।
দিল্লিতে ‘প্রোমোটিং কালচার অব পিস অর শেয়ার্ড প্রসপারিটি: এ ভিশন ফর সাউথ এশিয়া’Ñ শীর্ষক একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন একে আব্দুল মোমেন। এ সময় তিনি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্থগিত হয়ে যাওয়া তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গ তোলেন। তিনি ভারতকে মনে করিয়ে দেন যে, রাজনীতির কারণে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার খাতগুলো বন্ধ রাখা উচিত নয়।