Home » নাজমুলের সেঞ্চুরিতে রান তাড়ায় স্মরণীয় জয় বাংলাদেশের

নাজমুলের সেঞ্চুরিতে রান তাড়ায় স্মরণীয় জয় বাংলাদেশের

0 মন্তব্য 59 ভিউজ

দারুণ দুটি সেঞ্চুরি পেয়েছেন দুজন। কিন্তু প্রতিপক্ষ দলে বলে হ্যারি টেক্টর ও নাজমুল হোসেনের গতিপথটা একই হওয়ার সুযোগ ছিল না চেমসফোর্ডের এ রাতে। হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দিয়ে শেষ পর্যন্ত ফেরেন নাজমুল, তবে টেক্টরের চতুর্থ সেঞ্চুরি ম্লান করে শেষ হাসিটা প্রথম ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি পাওয়া নাজমুলেরই।

বৃষ্টির কারণে ৪৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ৩২০ রানের লক্ষ্য বাংলাদেশ পেরিয়ে গেছে ৩ উইকেট ও ৩ বল বাকি থাকতেই। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়, ৩০০ বা এর বেশি রান করে পঞ্চম জয়।

বড় রান তাড়ায় শুরুটা ঠিক ঝোড়ো হয়নি বাংলাদেশের, প্রথম পাওয়ার প্লেতে ৯ ওভারে ওঠে ৪০ রান, ফেরেন তামিম ইকবাল। আশাজাগানিয়া শুরুর পরও ইনিংস বড় করতে পারেননি লিটন দাসও।

বড় রান তাড়ায় বাংলাদেশকে সে অর্থে প্রথম আশা জোগায় সাকিব আল হাসান ও নাজমুলের ৪৭ বলে ৬১ রানের জুটি। আক্রমণের শুরুটা করেন নাজমুল, এরপর যোগ দেন সাকিব। সে সময়ে ৪ ওভারে ওঠে ৪৩ রান। উইকেটের খোঁজে কার্টিস ক্যাম্ফারকে বোলিংয়ে ফেরান বলবার্নি, সফলও হন। স্ল্যাশ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন সাকিব।
পরের গল্পটা নাজমুল ও হৃদয়ের। সাকিব ফেরার পর ৮ ওভারে দুজন তোলেন ৬১ রান। নাজমুল ফিফটি পূর্ণ করেন ৪৯ বলে, আগের ক্যারিয়ারসেরা ৭৩ রানকে ছাড়িয়ে যান দ্রুতই। পেসার, স্পিনার—কাউকেই তখন ছাড় দিচ্ছিলেন না দুজন। হৃদয় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পান ৪৯ বলে, দুজনের সেঞ্চুরি জুটিতে লাগে ৮০ বল।
নব্বইয়ের ঘরে দ্রুতই যাওয়ার পর সেঞ্চুরি পর্যন্ত যেতে একটু সময় নেন নাজমুল, অবশেষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ডকরেলকে আড়াআড়ি শটে খেলা ডাবলস নিয়ে। মাইলফলকে যেতে তাঁর লাগে ৮৩ বল। সেঞ্চুরির পর উদ্‌যাপনটাও একটু বাড়তিই হয় তাঁর।
নাজমুল ও হৃদয়ের জুটি ম্যাচ বের করে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছিল ভালোভাবেই, আয়ারল্যান্ডকে এরপর তৃষিত ব্রেকথ্রুটা এনে দেন ডকরেল। তাঁকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন হৃদয়। তিনি ফিরলেও শট খেলা থামাননি নাজমুল, মুশফিকের সঙ্গে তাঁর জুটিটা অবশ্য বড় হয়নি। ক্যাম্ফারের শর্ট বলে ডিপ মিড উইকেটে এ রাতের আরেক সেঞ্চুরিয়ান হ্যারি টেক্টরের হাতে ক্যাচ দেন নাজমুল।
এরপর বাংলাদেশের বড় ভরসা হয়ে ছিলেন মুশফিক, নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেন মিরাজও। কিন্তু ডকরেলের বলে মিরাজ এলবিডব্লু হলে একটু চাপ বাড়ে বাংলাদেশের। তাইজুল ইসলামকে নিয়ে এগোতে থাকেন মুশফিক, সমীকরণটা নাগালের মধ্যেই রাখেন তিনি। শেষের আগের ওভারে এসে তাইজুলকে এলবিডব্লু করে আয়ারল্যান্ডকে আবার আশা দেন জশ লিটল। এর আগেই রান আউট থেকে বেঁচে যান মুশফিক।
তবে মুশফিক স্নায়ু ধরে রাখেন, শেষ ওভারে ফুলটসে ক্যাচ তুললেও টেলিভিশন আম্পায়ার সেটিকে দেন নো বল। ফ্রি হিটে স্কুপ করে চার মেরে বাংলাদশের দারুণ জয় নিশ্চিত করেন মুশফিক। এর আগে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টসে জিতে অনুমিতভাবেই ফিল্ডিং নেন তামিম ইকবাল, ১৬ রানের মধ্যে আয়ারল্যান্ডের ২ উইকেট তুলে নেওয়ার পর নিশ্চিতভাবেই খুশি ছিলেন তিনি।

প্রথম ওভারেই ইনসুইংয়ে পল স্টার্লিংকে ফেরানোর পর আইরিশ ব্যাটসম্যানদের ঝামেলায় ফেলেন মুভমেন্ট দিয়ে। পরের সাফল্য আসে ইনিংসের সপ্তম ওভারে, হাসানের বেরিয়ে যাওয়া বলে পয়েন্টে ক্যাচ দেন আরেক ওপেনার স্টিফেন ডোহেনি।
শুরুর সাফল্যের রেশ মিলিয়ে যায় হ্যারি টেক্টর ও অ্যান্ডি বলবার্নির জুটিতে। হাসানের মতো বাকি দুই পেসার ইবাদত হোসেন ও শরীফুল ইসলাম কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগাতে পারেননি। বলবার্নি ও টেক্টরের ৯৮ রানের জুটি শুরুর চাপ কমিয়ে দেয় অনেকটাই। সে জুটি ভাঙেন অবশ্য শরীফুলই, তাঁর বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে কট-বিহাইন্ড বলবার্নি।
লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফারের ইনিংস এরপর বড় হয়নি, আয়ারল্যান্ডকে কমের মধ্যেই আটকে রাখার আশাও তখন বাড়ে বাংলাদেশের। সেটি বদলে যায় ডকরেলের সঙ্গে টেক্টরের জুটিতে। অন্য প্রান্তে টেক্টর আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করে যাচ্ছিলেন অবশ্য। ৫৩ বলে ফিফটি পান তিনি। গতির বিপক্ষে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে দেখে দুই বাঁহাতি সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলামের স্পিন দিয়ে টেক্টরের পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেন তামিম। সে পরিকল্পনাও ভেস্তে যায় তাঁর বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে।
তাইজুলের এক ওভারেই টেক্টর মারেন তিন ছক্কা। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি টেক্টর পান ৯৩ বলে। এ চার সেঞ্চুরিই এসেছে সর্বশেষ ৯ ইনিংসে। সেঞ্চুরির পর মাত্র ১৯ বলেই আরও ৪০ রান যোগ করেন টেক্টর। ইবাদতের বলে বোল্ড হওয়ার আগে তাঁর ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ১০টি ছক্কা।

আয়ারল্যান্ডের ব্যাটসম্যানের মধ্যে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কা এখন তাঁরই, বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো ব্যাটসম্যানের মারা ছক্কার সংখ্যায় এটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। কম যাননি ডকরেলও। ৩১ বলে ফিফটি করেন, আইরিশদের শেষের লাফটা এনে দেন তিনিই। ৪৭ বলে ৭৪ রানের ইনিংসে অবশ্য সাকিবের হাতে জীবনও পান। শেষ পর্যন্ত মারেন ৩টি চার ও ৪টি ছক্কা। ৮ বলে ২০ রানের ক্যামিও খেলেন মার্ক অ্যাডাইরও।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.