তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, নির্বাচনে জাতি আমাদের বেছে নিয়েছে। তবে নির্বাচনের ফলাফল চূড়ান্ত হয়নি বলে সেটা পরিবর্তন হতে পারে না।
তুরস্কে রোববার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গণনা এখনো অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, যে পরিমাণ ভোট গণনা করা হয়েছে, তাতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে বিরোধী জোটের প্রার্থীর সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়াতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে তুর্কি সংবাদমাধ্যম হুরিয়াত ডেইলি জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ ভোট গণনার বাকি আছে, তাতেও প্রয়োজনীয় ভোট পেয়ে জিতে যেতে পারেন ৬৯ বছর বয়সি এরদোগান। বিশেষ করে প্রবাসী ভোটারদের বেশির ভাগ ভোট এখনো গণনার বাকি আছে। আর প্রবাসী ভোটারের বড় অংশ পেয়ে থাকেন এরদোগান। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিদেশি ভোটের ৬০ শতাংশ পেয়েছিলেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, এখনো নির্বাচনে জেতার সম্ভাবনা আছে। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ালে তা মেনে নেব। সোমবার সকালে রাজধানী আঙ্কারায় একে পার্টির কার্যালয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে এমন কথা বলেন তিনি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আঙ্কারায় সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলার সময় এরদোগান বলেন, তিনি এখনো জিততে পারেন। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রানঅফ (দ্বিতীয় দফা নির্বাচন) মেনে নেবেন এবং জাতির সিদ্ধান্তকে সম্মান করবেন তিনি। তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘প্রথম দফায় নির্বাচন শেষ হয়েছে কি না- আমরা এখনো জানি না। … যদি আমাদের জাতি দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য নির্বাচন করে, তাহলে সেটাকেও স্বাগত জানাব।’
সর্বশেষ তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নির্বাচনের প্রথম ধাপে কোনো প্রার্থীই প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্থাৎ ৫১ শতাংশ ভোট পাবেন না। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুসারে নির্বাচন গড়াতে পারে দ্বিতীয় ধাপে। আর সেটা হলে আগামী ২৮ মে অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় দফা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া দুই প্রার্থীর মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।
এদিকে তুরস্কের পার্লামেন্টের ৬০০ এমপি পদের নির্বাচনে ৩২৩টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছে এরদোগানের দল একে পার্টির নেতৃত্বাধীন পিপলস অ্যালায়েন্স। এর মধ্যে একে পার্টি এককভাবে পেয়েছে ২৬৯টি আসন। বিপরীতে নির্বাচনে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স পেয়েছে ২১৩ আসন।
হুরিয়াত ডেইলি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) নেতৃত্বাধীন পিপলস অ্যালায়েন্সের সঙ্গে থাকা অন্য দলগুলো হলো- ন্যাশনালিস্ট মুভমেন্ট পার্টি (এমএইচপি), নিউ ওয়েলফেয়ার পার্টি (ওয়াইআরপি) এবং গ্রেট ইউনিয়ন পার্টি (বিবিপি)।
অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) নেতৃত্বাধীন জোট নেশন অ্যালায়েন্সে রয়েছে- আইওয়াইআই পার্টি (গুড পার্টি), ফেলিসিটি পার্টি, দ্য ডেমোক্রেসি অ্যান্ড প্রগ্রেসিভ পার্টি (ডিইভিএ), ফিউচার পার্টি এবং ডেমোক্র্যাট পার্টি (ডিপি)। এর মধ্যে সিএইচপি এককভাবে পেয়েছে ১৬৮ আসন।