যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর লাখ লাখ ই-মেইল পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালির একটি ডোমেইনে পাঠানো হয়েছে। এসব ই-মেইলে মার্কিন বাহিনীর ‘অতিসংবেদনশীল’ নানা তথ্য ছিল। জানা গেছে, টাইপ করার সময় ছোট ভুলের জেরে এসব ই-মেইল যথাযথ প্রাপকের পরিবর্তে মালির ওই ডোমেইনে চলে গেছে।
পশ্চিম আফ্রিকার দেশ মালি বিশ্বরাজনীতিতে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভুল করে পাঠানো এসব ই-মেইলে মার্কিন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের ভ্রমণের নথি, ট্যাক্স রিটার্ন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পাসওয়ার্ড ও কূটনৈতিক নথি ছিল।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, ডোমেইনের নামে একটি অক্ষরের ভুলে এ ঘটনা ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ‘.এমআইএল’ ডোমেইন ব্যবহার করে। কিন্তু ই-মেইল পাঠানো হয়েছে ‘.এমএল’ ডোমেইনে। অর্থাৎ, ডোমেইনের ঠিকানা টাইপ করতে গিয়ে একটি ‘আই’ লেখা হয়নি। উল্লেখ্য, ‘.এমএল’ ডোমেইন ব্যবহার করা হয় মালি থেকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কিছু সদস্য, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত ট্রাভেল এজেন্ট, গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য, ব্যক্তিগত ঠিকাদার ও অন্যরা এসব ই-মেইল পাঠিয়েছেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে পাঠানো একটি ই-মেইলে মার্কিন সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল জেমস ম্যাককোনভিলের ইন্দোনেশিয়া সফরের বিস্তারিত সূচি ছিল।
এ ভুল প্রথম নজরে আনেন নেদারল্যান্ডসের ইন্টারনেট উদ্যোক্তা জোহানেস জুরবিয়ের। তিনি মালির জন্য ডোমেইন ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত। সংবাদমাধ্যমকে জোহানেস বলেন, এসব ঘটনা কয়েক দশক ধরে চলেছে। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি।
গত জানুয়ারি থেকে ভুল করে পাঠানো এসব ই-মেইল সংগ্রহ করতে শুরু করেন জোহানেস। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তিনি ১ লাখ ১৭ হাজার ই-মেইল সংগ্রহ করেছেন। এমনকি গত বুধবার (১২ জুলাই) এক দিনে তিনি প্রায় এক হাজার ই-মেইল সংগ্রহ করেছেন। বিষয়টি তিনি মালি সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এ ঘটনা খতিয়ে দেখছে। এ বিষয়ে পেন্টাগনের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কমান্ডার টিম গোরম্যান বলেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ ঘটনা সম্পর্কে জেনেছে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সম্ভাব্য ঝুঁকির বিষয়টি মাথায় রেখে তা গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
লেফটেন্যান্ট কমান্ডার টিম আরও জানান, মালির ডোমেইনে ভুল করে পাঠানো ই-মেইল ইতিমধ্যে ব্লক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রেরকদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, ই-মেইল পাঠানোর আগে তাঁদের অবশ্যই প্রাপকের ঠিকানা গুরুত্ব দিয়ে যাচাই করে দেখতে হবে।