এই পর্বের রুটিনও হাতুরাসিংহেই দেবেন, ‘কয় দিন চলবে বা কিভাবে ওদের অনুশীলন হবে, দু-এক দিনের মধ্যেই টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের পরিকল্পনা জানাবে।’ বিশ্বকাপ দলে যদি না-ও থাকেন, তবু অন্য সাতজনের মতো প্রস্তুতি বন্ধ হবে না মাহমুদেরও। তিনি তৈরিই থাকবেন ২০ বছর আগের আকরাম হওয়ার জন্য!
সাবেক অধিনায়কদের বাদ পড়ার মিছিলই যেন দেখা গিয়েছিল সেবার! ২০০৩ বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়েন কাছাকাছি সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়া তিনজন—আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম ও নাঈমুর রহমান। তখনকার বাস্তবতায় ওই বাদ পড়াকে তাঁদের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের সমাপ্তি বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল। পরের দুজনের ক্ষেত্রে সে ধারণা মিলে গেলেও মেলেনি আকরামের ক্ষেত্রে। বিশেষত ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুর্বিষহ হয়ে ওঠা দক্ষিণ আফ্রিকার সেই বিশ্ব আসরে অবিশ্বাস্যভাবে খেলার সুযোগ পেয়ে যান আগের দুই বছর কোনো ওয়ানডেই না খেলা এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
চোট পেয়ে ফাস্ট বোলার মাশরাফি বিন মর্তুজা দেশে ফিরে এলেও তাঁর জায়গায় দলের ব্যাটিং গভীরতা এবং অভিজ্ঞতা বাড়াতে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় আকরামকে। বিশ্বকাপে গিয়ে দুই ম্যাচ খেলে দলের ভাগ্য বদলাতে না পারলেও তাঁর ক্যারিয়ার ঠিকই আরো কিছুটা দীর্ঘ হয়েছিল। কে বলতে পারে যে ২০ বছর পরের আসন্ন বিশ্বকাপেও আকরামের মতো করে কারো ভাগ্য খুলে যাবে না? চোট-আঘাত সমস্যায় বাদ পড়া কেউ সুযোগ পেয়েও তো যেতে পারেন। তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে যাতে বিকল্প খেলোয়াড়কে পুরোপুরি প্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া যায়, সে জন্য নির্দিষ্টসংখ্যক ক্রিকেটারকে অনুশীলনে ব্যস্ত রাখার চাহিদাপত্রও এরই মধ্যে দিয়ে রেখেছেন চন্দিকা হাতুরাসিংহে।
বিশ্বকাপ সামনে রেখে জাতীয় দলের হেড কোচের পরিকল্পনা অনুযায়ী অচিরেই শুরু হতে যাওয়া সেই অনুশীলনের জন্য যে বা যাঁরা ডাক পেতে চলেছেন, তাঁদের অন্যতম এশিয়া কাপের দল থেকে বাদ পড়া মাহমুদ উল্লাহও। এমনিতে এই আসরের জন্য স্ট্যান্ডবাই তালিকায় থাকা তিনজনসহ ২০ জনের দলে নেই এই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। তাই বিশ্বকাপের ১৫ জনের দলে থাকার দৌড় থেকেও একরকম ছিটকেই গিয়েছেন তিনি। তবে জরুরি পরিস্থিতিতে যখন-তখন যে কাউকে প্রয়োজন পড়তে পারে, এই ভাবনা থেকে আয়োজিত হতে যাওয়া অনুশীলনে কি দেখা যাবে মাহমুদকে? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের পাল্টা প্রশ্নেই আছে এর জবাব, ‘থাকবে না কেন?’ এই অনুশীলনে মাহমুদের সঙ্গী হবেন আর কয়জন? সংখ্যাটিও জানালেন মিনহাজুল, ‘আটজন ক্রিকেটারের একটি তালিকা আমরা দেব।
ওরা ঢাকাতেই অনুশীলন করবে। বলতে পারেন, ওদের নিয়ে আলাদা একটি অনুশীলন শিবিরই হবে।’ এখানে ‘আলাদা’ শব্দটি যুক্ত হয়ে যাওয়ার কারণ চট্টগ্রামে বাংলাদেশ টাইগার্সের অনুশীলন শিবিরও চলছে। এশিয়া কাপের দল ঘোষিত হয়ে যাওয়ার পর বাদ পড়াদের সেই শিবিরেই পাঠিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের। কিন্তু হাতুরাসিংহের চাওয়ায় বদলে গেছে সেটিও।
তিনি চান, এই আটজনের প্রস্তুতি পর্বটি ঢাকায় মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেই চলুক। সেটি যে বিশ্বকাপ সামনে রেখে কিছু খেলোয়াড়কে তৈরি রাখার জন্যই, তা-ও বলেছেন মিনহাজুল, ‘বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ওদেরও অনুশীলন চলতে থাকবে। কেউ চোটে পড়লে যাতে বিকল্প তৈরি থাকে, সে জন্যই।’ এই পর্বের রুটিনও হাতুরাসিংহেই দেবেন, ‘কয় দিন চলবে বা কিভাবে ওদের অনুশীলন হবে, দু-এক দিনের মধ্যেই টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের পরিকল্পনা জানাবে।’ বিশ্বকাপ দলে যদি না-ও থাকেন, তবু অন্য সাতজনের মতো প্রস্তুতি বন্ধ হবে না মাহমুদেরও। তিনি তৈরিই থাকবেন ২০ বছর আগের আকরাম হওয়ার জন্য!