দেহের ক্লান্তি কাটিয়ে মন মেজাজ ফুরফুরে রাখতে কফি অনেকটাই সাহায্য করে। তাই অনেকেরই সারাদিনের সঙ্গী এক কাপ কফি। তবে দুধ, ক্রিম, চিনি মিশ্রিত কফিতে হয়তো স্বাদ থাকতে পারে কিন্তু উপকারিতা অনেকটাই কমে যায়। নিয়মিত এভাবে কফি খেলে, লাভের চেয়ে ক্ষতিই বেশি। তাই কফি খাওয়ার এই অভ্যাসে বদল আনুন। কফির উপকার পুরোদস্তুর পেতে গেলে আপনাকে খেতে হবে চিনি ছাড়া কালো কফি। কালো কফি এমনিতেই শরীরে পক্ষে অনেক বেশি ভাল। তাড়াতাড়ি ওজন ঝরাতেও সাহায্য করে। কিন্তু ঠিক কতটা পরিমাণ খাওয়া উচিত? এর গুণই বা কী? আসুন জেনে নেয়া যাক।
পুষ্টিকর
ব্ল্যাক কফিকে পুষ্টির পাওয়ার হাউস বলা যেতে পারে। এতে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন বি-২, ভিটামিন বি-৩, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ক্যালোরি একেবারেই থাকে না বললেই চলে। যার ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং শরীরের বিপাকীয় হার বাড়াতে সাহায্য করে ব্ল্যাক কফি।
অ্যালজাইমার রোগে উপকারি
অ্যালজাইমার এক ধরনের মস্তিষ্কের রোগ। এতে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি বা চিন্তাভাবনার শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। অবশেষে সহজ কাজগুলি করার ক্ষমতাও চলে যায়। নিয়মিত কফি পান এই রোগের ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষণায় দেখা গেছে, দিনে ২-৩ কাপ কফি পান করলে ডিমেনশিয়া এবং অ্যালজাইমারের ঝুঁকি প্রায় ৬৫ শতাংশ কমে যায়।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
চিনি ছাড়া কালো কফিতে ক্যালোরির পরিমাণ খুবই কম। যে কারণে ওজন কমাতে এর জুড়ি মেলা ভার। বিশেষজ্ঞদের মতে, কালো কফিতে রয়েছে ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড, যা তাড়াতাড়ি মেদ ঝরাতে সাহায্য করে। এছাড়া নতুন করে শরীরে মেদ জমার আশঙ্কাও কমায়।
শরীরচর্চার আগে কালো কফি খান
গবেষণায় দেখা গেছে, কালো কফি শারীরিক শক্তি বা এনার্জি বাড়াতে সহায়তা করে। সারা দিন অনেক বেশি সক্রিয় থাকা যায়। অতিরিক্ত পরিমাণ ক্যালোরি ঝরাতেও সাহায্য করে এটি। তাই শরীরচর্চা করার আগে কালো কফি খেতে পারেন।
রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়
দিনে ১-২ কাপ কালো কফি পান টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এই কফি শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন বাড়ায়, যার ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
মেজাজ ঠিক রাখে
কালো কফি উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা কমিয়ে মেজাজ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সারা দিনে এক কাপ ব্ল্যাক কফি মানসিকভাবে চাঙ্গা করে তুলতে যথেষ্ট। তাই মুড ভাল করতে কালো কফির উপর ভরসা রাখতেই পারেন।
কালো কফির অপকারিতা
দিনে ২-৩ কাপের বেশি ব্ল্যাক কফি পান করলে নানা রকম স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে ক্যাফেইন রয়েছে। তাই অত্যধিক ব্ল্যাক কফি খেলে অ্যাসিডিটি, গ্যাস, হজমের সমস্যা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অনিদ্রা রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তাই বেশি কালো কফি না খাওয়াই ভাল।
কখন কফি পান করা উচিত? বিশেষজ্ঞরা সকালে বা দিনের বেলায় কালো কফি পান করার পরামর্শ দেন। শরীরচর্চা বা ওয়ার্কআউটের ঠিক আগে কালো কফি খেতে পারেন। তবে রাতে শোওয়ার আগে ভুলেও কফি খাবেন না। তাহলে স্বাস্থ্যের বিরাট ক্ষতি হতে পারে।