এবার ইরানে বোমা হামলা হয়েছে। বুধবার (৩ জানুয়ারি) দেশটির ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীর এক অনুষ্ঠানে এ হামলা করা হয়। এতে অন্তত শতাধিক লোক নিহত হয়েছেন। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইরানে অন্তত দুটি বোমা হামলা হয়েছে। মার্কিন হামলায় নিহত কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ হামলা করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কেরমান শহরে কবরস্থানে এসব হামলা করা হয়েছে। এতে প্রথমে ৭৩ জন নিহতের খবর জানানো হয়। পরে নিহত বেড়ে ১০৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭০ জন।
ইরানের ন্যাশনাল মেডিকেল ইমারজেন্সি অর্গানাইজেশনের প্রধান জাফার মিয়াদফার বলেন, হামলায় নিহত বেড়ে ৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে। পরে দেশটির জরুরি সেবার মুখপাত্র বাবাক ইয়াকতাপারাস্ত জানান, বোমা হামলায় নিহত বেড়ে ১০৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, দুর্ঘটনায় আর ১৭০ জন আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিস্ফোরণের পর পদদলিত হয়ে কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্থানীয় এক প্রদেশের এক কর্মকর্তার বরাতে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জঙ্গিরা এ হামলা চালিয়েছে। তবে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিস্ফোরণের ঘটনায় কোনো গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।
দেশটির আধা সরকারি নুর নিউজ জানিয়েছে, কবরস্থানের সড়কে বেশ কয়েকটি গ্যাসের ক্যানিস্টার বিস্ফোরিত হয়েছে।
কাসেম সোলাইমানি ইরানের ইসলামী বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর মেজর জেনারেল ছিলেন। ১৯৯৮ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত তিনি কুদস বাহিনীর বহির্দেশীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কার্যক্রমের একজন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাকে অনেকে দেশটির ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির ডানহাত ও ইরানের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে জানতেন।
১৯৯০ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধ চলাকালে ৪১তম বিভাগের অধিনায়ক ছিলেন। এরপর বেশ কয়েকটি ঐচ্ছিক অভিযানও পরিচালনা করেন তিনি। এছাড়া সাদ্দামবিরোধী শিয়া ও ইরাকের কুর্দি গোষ্ঠীগুলোকে সামরিক সহায়তা প্রদান এবং পরবর্তীতে হিজবুল্লাহ ও হামাসকেও সহায়তা করেছেন। এছাড়া ২০১২ সালে সোলাইমানি সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় বিশেষত ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্টের বিরুদ্ধে পরিচালিত অভিযানে সিরিয়ার সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা প্রদান করেন। সোলাইমানি ২০১৪-১৫ সালে ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক এবং লেভান্টের (আইএসআইএল) বিরুদ্ধে অগ্রসর হওয়া সম্মিলিত ইরাকি সরকার এবং শিয়া মিলিশিয়া বাহিনীর কমান্ডেও সহায়তা করেছিলেন।
সোলেইমানি ২০২০ সালের ৩ জানুয়ারি ইরাকের বাগদাদে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি টার্গেট করা বিমান হামলায় নিহত হন। তার সাথে ফোর্সের আরও কয়েকজন সামরিক সদস্যরা নিহত হন।
পূর্ববর্তী পোস্ট