Home » মিয়ানমারের ‘তরমুজ’: বাইরে সৈন্য, ভেতরে বিদ্রোহী

মিয়ানমারের ‘তরমুজ’: বাইরে সৈন্য, ভেতরে বিদ্রোহী

0 মন্তব্য 33 ভিউজ

২৪ বছরের ইয়ান মিয়ানমারের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা৷ তিনি সামরিক জান্তা সরকারের নিরাপত্তা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বে থেকেও ঝুঁকি নিয়ে গোপনে বিদ্রোহীদের পক্ষে কাজ করতেন৷ গত বছরের এপ্রিলে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এখন সীমান্তবর্তী একটি শহরে অবস্থান করছেন।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে ইয়ান বলেন, ‘আমি নিজেকে অন্যায় শাসন থেকে মুক্ত করেছি।’ জীবনের ঝুঁকি এড়াতে ইয়ান নিজের পুরো নাম-পরিচয় প্রকাশ করতে চাননি৷
গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চিকে হটিয়ে ২০২১ সালে ক্ষমতা দখল করার পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার এখন সবচেয়ে বড় প্রতিরোধের মুখোমুখি৷ বিরোধী পক্ষগুলো এখন একসঙ্গে সরকারের বিরুদ্ধে লড়ছে৷ সরকারের ভেতরেও অনেকে গোপনে বিরোধীদের হয়ে কাজ করছে বলে জানা যাচ্ছে৷
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এসব বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে কোনো জবাব দেয়নি জান্তা সরকার৷ বিরোধীরা বলছেন, সামরিক বাহিনীর ঠিক কতজন বিদ্রোহীদের কাছে তথ্য সরবরাহ করছেন, তা নির্ধারণ করা কঠিন৷ তবে তাঁরা সামরিক বাহিনীর যাতায়াতসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছেন, যার ওপর ভিত্তি করে বিরোধীরা আক্রমণের পরিকল্পনা সাজাতে পারছে।
পিপলস গোল নামের একটি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মুখপাত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ‘আমরা যে তথ্য সংগ্রহ করেছি, তার মাধ্যমে মানুষের জীবন রক্ষা পাচ্ছে।’
ইয়ান ২০২০ সালে তাঁর ভাইয়ের পথ ধরে মিয়ানমারের পুলিশে যোগ দিয়েছিলেন৷ কিন্তু সামরিক অভ্যুত্থানের পর নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও বিক্ষোভকারীদের ওপর সামরিক বাহিনীর নৃশংস আচরণের কারণে তাঁর মোহভঙ্গ হয়৷ কারণ হিসেবে তিনি বলছেন, ‘মিয়ানমারের সাধারণ মানুষ আমাদের দেখলে ভূত মনে করেন৷ তাঁরা আমাদের ঘৃণা করেন৷’
ইয়ানের ভাই দেশ ছেড়ে চলে গেছেন৷ ইয়ানকে তিনি জান্তাবিরোধী একটি পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন৷ এই পক্ষটির কাজই হলো ইয়ানের মতো নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা৷ বার্মিজ ভাষায় এঁদের ‘তরমুজ’ বলে ডাকেন তাঁরা৷ কেননা, তরমুজের মতো তাঁরা বাইরে থেকে সবুজ এবং সামরিক বাহিনীর প্রতি অনুগত। কিন্তু ভেতরে তাঁরা লাল, যা ক্ষমতাচ্যুত ন্যাশনাল লিগ অব ডেমোক্রেসির রং৷
ইয়ান বলেন, তিনি কাজের ফাঁকে সহকর্মীদের চোখ ফাঁকি দিয়ে মোবাইল ফোন থেকে বার্তা পাঠিয়ে তথ্য পাচার করতেন৷ জান্তার জ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরা কোথায় যাচ্ছেন, বিভিন্ন স্থানে কত পুলিশ সদস্য নিয়োজিত আছেন কিংবা কী পরিমাণ জ্বালানি ও অস্ত্র তাঁদের আছে, সেসব তথ্য তিনি বিদ্রোহীদের কাছে সরবরাহ করতেন৷
বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, তাঁরা নিরপেক্ষভাবে এসব তথ্য যাচাই করতে পারেনি৷ তবে সামরিক বাহিনীর এক সদস্য জানিয়েছেন, তাঁদের কারও পক্ষে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হয়ে গোয়েন্দাগিরি করা কঠিন৷ তবে কেউ কেউ আছেন, যাঁদের বিদ্রোহীদের প্রতি পক্ষপাত আছে৷
ওয়াশিংটনভিত্তিক চিন্তক প্রতিষ্ঠান ‘ইউনাইটেড স্টেটস ইনস্টিটিউট ফর পিস’-এর হিসাবে, আট হাজার সদস্য নিরাপত্তা বাহিনী থেকে পালিয়েছেন৷
সামরিক বাহিনীর সাবেক ক্যাপ্টেন হট্টেট মিয়াট জানিয়েছেন, আগে যেখানে সামরিক বাহিনীর প্রতিটি ব্যাটালিয়নে কয়েক শ করে সদস্য থাকত, এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্যাটালিয়ন প্রায় ১৩০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হয়৷

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.