Home » কেউ অনিয়ম বা দুর্নীতি করলে মাফ নেই

কেউ অনিয়ম বা দুর্নীতি করলে মাফ নেই

0 মন্তব্য 45 ভিউজ

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স (শূন্য সহনশীলতা)’ দেখানো, মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নেওয়াসহ নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের প্রতি একগুচ্ছ নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ সোমবার নতুন মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সব মিলিয়ে পঞ্চমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
বৈঠকের পর সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনাসহ মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। এ ছাড়া বৈঠকে উপস্থিত একজন মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বিষয়ে জানা গেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বৈঠকে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানানো হয়। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী তাঁর তরফ থেকে মন্ত্রীদের কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে ওনার ‘জিরো টলারেন্স’ থাকবে। সব মন্ত্রণালয়কে একই নীতি অনুসরণ করতে বলেছেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রিসভার একজন সদস্য সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেউ যদি কোনো অনিয়ম করেন বা কোনো দুর্নীতি করেন, তাহলে তাঁর কোনো মাফ নেই, ছাড় নেই। প্রধানমন্ত্রী কঠোরভাবে এ বিষয়টি দেখবেন।
এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী আরও কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান মন্ত্রিসভার ওই সদস্য। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় মিতব্যয়ী হওয়া, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা, সৎ ও স্বচ্ছ থাকা এবং কোনো ক্রয়প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম করা যাবে না। কোনো পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ ধীরগতি করা যাবে না। আর প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে নাগরিক সুবিধা দেখে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়েছেন। বিশেষ করে আগামী পবিত্র রমজান মাসে যাতে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং একই সঙ্গে রমজান মাস–সংশ্লিষ্ট যেসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে যায়, সেগুলোর সরবরাহ পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে ব্যাপারেও কাজ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্বাচনী ইশতেহার দেওয়া হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন ইশতেহারে ওই মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে ভিত্তি করে যেন এখনই কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয় এবং সেই কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ করা হয়।
কৃষি উৎপাদনের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি উৎপাদন যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণে আরও সংরক্ষণাগার তৈরিরও নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি। এ ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ—‘স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট জনগণ’—এই চার স্তম্ভকে ভিত্তি করে যে মন্ত্রণালয় যে অংশের সঙ্গে জড়িত, সে অনুযায়ী পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়ন করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া যেসব প্রকল্প শেষ পর্যায়ে আছে, সেগুলো দ্রুত শেষ করা এবং যে প্রকল্প থেকে জনগণ সরাসরি উপকার পাবে, সেগুলো দ্রুত নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, নতুন প্রকল্প নেওয়ার আগে সেটি কীভাবে জনগণের কল্যাণে কাজে লাগবে, সেটি ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে।
সামাজিক নিরাপত্তার কর্মসূচি যেগুলো আছে, সেগুলোর সুবিধা যাতে প্রকৃত উপকারভোগীরা পায়, সেটি পরিবীক্ষণ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এ ছাড়া সরকারি শূন্য পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি নারী উন্নয়নে ও নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের যে ধারা তৈরি হয়েছে, সেটি যেন কোনো অবস্থাতেই ব্যাহত না হয়, সেদিকে নজর দিতে বলেছেন তিনি।
রপ্তানি বহুমুখীকরণ এবং নতুন বাজার অনুসন্ধান করে সেখানে প্রবেশে কীভাবে সহায়তা করা যায়, সে বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিশেষ করে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য; পাট ও পাটজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য—এই তিনটি পণ্যকে গার্মেন্টস বিকাশে যেভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, প্রয়োজনে সে রকম সহায়তা দিয়ে যেন বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তিবিষয়ক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া যুবসমাজকে খেলাধুলা ও সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি নিতে বলেছেন, যাতে করে তারা মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে বিরত থাকতে পারে। অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতা সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি যে ভাষণ দেবেন, সেটির খসড়া মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন।

আরও পড়ুন

মতামত দিন


The reCAPTCHA verification period has expired. Please reload the page.

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.