( ডা. সুই খার হলেন মিয়ানমারের বাংলাদেশসংলগ্ন চিন প্রদেশের ‘চিনল্যান্ড’ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা সিএনএফ–এর ভাইস চেয়ারম্যান। গৃহযুদ্ধের চলতি ও আগামী অভিমুখটি বুঝতে তাঁর সঙ্গে ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে কথা বলেন বাংলাদেশের দুজন স্বাধীন গবেষক। উল্লেখ্য, চিনরা প্রথম জাতীয় ঐক্যের সরকার বা এনইউজিতে যোগ দিয়েছিল। প্রাসঙ্গিক বিবেচনায় বাংলাদেশের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটি ছাপা হলো। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলতাফ পারভেজ ও আশফাক রণি।
# জান্তা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে মানুষকে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য করে।
# পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এই বছরের মধ্যে বর্মি সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অকার্যকর হবে।
# রোহিঙ্গারা বার্মার স্বাধীন হওয়ার বহু আগে, শত শত বছর ধরে আরাকানে রয়েছে। আমরা রোহিঙ্গাদের আরাকানের নিজস্ব জাতিসত্তাই মনে করি।)
প্রশ্ন: থ্রি ব্রাদারহুডের ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরুর পর আমরা শুনছি, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ‘তাতমা-দ’ বিভিন্ন প্রদেশে নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে। চিন ও অন্যান্য প্রদেশের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানাবেন?
সুই খার: অক্টোবরে উত্তর শান প্রদেশে ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত প্রতিরোধযোদ্ধারা অগণিত পোস্ট ও ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। উত্তর শানে পরিস্থিতি এখন শান্ত। রাখাইন, চিন, কারেন, কারেনি, ম্যাগোয়ে, সাগাইংয়ে তীব্র প্রতিরোধ চলছে। তাতমা-দর অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত নয় বা সক্ষমতা নেই। বিভিন্ন অঞ্চলে তারা বিনা প্রতিরোধে ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টার্স, টেকটিক্যাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার্স ও রিজিওনাল কমান্ড হেডকোয়ার্টার্সের মতো সামরিক স্থাপনাগুলো ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বললে নেপিডো এখন নড়বড়ে অবস্থানে আছে।
প্রশ্ন: অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের আগে চিন প্রদেশ তুলনামূলকভাবে শান্ত ছিল। এখন সেনা সরকারের বিরুদ্ধে আপনাদের সক্রিয় দেখা যাচ্ছে। এ পরিবর্তনের কারণ কী?
সুই খার: আমরা ‘জাতীয় অনাক্রমণ চুক্তি’ সই করেছিলাম একসময়। কিন্তু অভ্যুত্থানের পর মানুষ মনে করেছে, তাঁদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তারা সামরিক সরকারের অধীন ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখছে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে তখন। জান্তা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়ে মানুষকে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে বাধ্য করে। এ পরিবর্তন শুধু চিন প্রদেশে হয়েছে, তা নয়, জান্তার নৃশংস হামলা পুরো দেশের মানুষের মধ্যে পরিবর্তন এনেছে।
প্রশ্ন: চিন প্রদেশের ভৌগোলিক ধরন ও বহু জাতিসত্তার কারণে অতীতে মিয়ানমারের অন্য প্রদেশের মতো সেখানে ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক বা সশস্ত্র আন্দোলন দেখা যায়নি, বর্তমানে যা দেখা যাচ্ছে। এটা কীভাবে হলো?
সুই খার: বিভিন্ন ধরনের আঞ্চলিক ভাষা থাকলেও আমরা সবাই চিন। আমরা বুঝেছি, বার্মিজ আধিপত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ঐক্য দরকার। সে তাড়না থেকে চিনরা এক হতে শুরু করে।
প্রশ্ন: অ-বামার সশস্ত্র দলগুলো অপ্রত্যাশিত সফলতা পেলেও এখনো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের দখলে। আপনারা কবে নাগাদ সরকারকে পরাজিত করার আশা করেন?
সুই খার: গত বছর বলেছিলাম, তিন বছরের মধ্যে বার্মিজ আর্মি পরাজিত হবে। অনেকে মনে করত তারা অপরাজেয়। এখন সবাই দেখছে, তারা অপরাজেয় নয়, ক্ষয়িষ্ণু প্রতিষ্ঠান। উত্তর শানে তারা কীভাবে মুখ থুবড়ে পড়েছে তা সবাই দেখেছে। গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোয়ও তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেই। সব জায়গায় তারা প্রতিরোধের মুখোমুখি। আগে বামার জনগোষ্ঠী এই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে নেয়নি। এবার সেটাও হলো। পুরো বার্মা এখন প্রতিরোধের ফ্রন্টলাইন। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, এই বছরের মধ্যে বর্মি সেনাবাহিনী সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে যাবে।
প্রশ্ন: জান্তাবিরোধী যুদ্ধে অ-বামার গেরিলাদের একক শত্রু থাকলেও একক কোনো স্বপ্ন আছে কি? যেমন ওয়া আর্মি ও থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সঙ্গে এনইউজির সরাসরি কোনো সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে না।
সুই খার: সবাইকে এক ছাতার নিচে, এক নেতৃত্বের নিচে আনতে পারলে ভালো হতো। অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে অ-বামারদের সঙ্গে বামারদের আস্থার ঘাটতি আছে। অ-বামার জাতিগুলোর ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক স্বপ্ন থাকলেও আরাকান আর্মি ছাড়া সবাই ফেডারেলিজমের কথা বলে। আরাকান আর্মিকে কনফেডারেশনের কথা বলতে শুনেছি। এখন পর্যন্ত কোনো অ-বামার সশস্ত্র দল স্বাধীনতার কথা বলেনি।
প্রশ্ন: জান্তাবিরোধী আন্দোলনের ভেতর একটা আস্থার সংকটের কথাও বললেন। সেটা একটু ব্যাখ্যা করবেন?
সুই খার: বার্মার অ-বামাররা বহুকাল ধরে বামার শ্রেষ্ঠত্ববাদের শিকার। বামাররা সংখ্যালঘুদের ওপর আধিপত্য করার চেষ্টা করে। এভাবে সাত দশক চলে গেছে। এনএলডির মাঝেও এ রকম প্রবণতা ছিল। সেই ধারাবাহিকতায় কিছু সন্দেহ-অবিশ্বাস আছে। বামাররা কখনো সমতার কথা ভাবেনি। আমাদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার চর্চা করতে দেয়নি। ফলে আমাদের মধ্যে এক ধরনের অবিশ্বাস আছে। সমন্বিত হতে সময় লাগবে। অ-বামারা স্বশাসনের সবকিছু কোনো দিনই বামারদের হাতে ছেড়ে দেবে না।
প্রশ্ন: সামরিক শাসন বিরোধী মিয়ানমারের জাতীয় ঐক্যের সরকার বা এনইউজিতে সুচির দল এনএলডির প্রাধান্য দেখা যায়। তার মানে কি এখানেও বামার শ্রেষ্ঠত্ববাদের সমস্যাগুলো থাকছে?
সুই খার: এনইউজিতে এনএলডির প্রাধান্য বিস্তারের আপাতত সুযোগ নেই। সে রকম প্রবণতা দেখাও যাচ্ছে না। আমরা যৌথ নেতৃত্বের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছি।
প্রশ্ন: মিয়ানমারজুড়ে জান্তার বাইরের শক্তিগুলোর মধ্যে ওয়া আর্মি ও থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স একধরনের চীনমুখী এবং ‘কে-থ্রি-সি’ (কাচিন-কারেন-কারেননি ও চিন) ও এনইউজি পশ্চিমপন্থী অবস্থায় রয়েছে। এ থেকে কি আমরা বলতে পারি, মিয়ানমার ভূরাজনৈতিক যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে?
সুই খার: আমি তা মনে করি না। ভৌগোলিক অবস্থান ও বার্মার ভেতরকার পরিস্থিতি নিয়ে সমর্থন ও ভূমিকার ধরনের কারণে এমনটি মনে হতে পারে। আমাদের সবার নিজস্ব নীতি আছে; বরং আমি বলব, উভয় পরাশক্তি অনেক সময় আমাদের নীতিগত অবস্থান বুঝতে ভুল করে। তবে বার্মা নিয়ে ওই দুই শক্তির ভেতর একধরনের প্রতিযোগিতা আছে।
প্রশ্ন: মিয়ানমারে চীনের প্রভাব সম্পর্কে সবাই অবগত। চীন আসলে কী চাইছে?
সুই খার: অনেকে মনে করে, চীন আমাদের শোষণ করতে চায়। তারা স্থিতিশীল বার্মার চেয়ে নিজের স্বার্থের কথাই ভাবে। আমি মনে করি, স্থিতিশীল বার্মা গণচীনের জন্য ভালো হবে। তাদের নীতিগত অবস্থান পর্যালোচনা করা উচিত। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের আমলেই চীন এখানে ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারত। এখন বরং সমস্যা হচ্ছে।
প্রশ্ন: আপনি বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়তে চলেছে? মাঠপর্যায়ে এর কী ধরনের সাক্ষ্য আছে?
সুই খার: তাদের স্থাপনাগুলো বেদখল হয়ে যাচ্ছে ক্রমাগত। কেন্দ্রীয় বার্মার অনেক এলাকা পিপলস ডিফেন্স ফোর্সগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেসব স্থাপনা তারা হারাচ্ছে, সেগুলো কমই তারা ফিরে পেতে চেষ্টা করছে। তারা বরং এখন অনেক বেশি আত্মরক্ষামূলক অবস্থান নিয়েছে। ২০২৪ সালের মধ্যে বার্মিজ সেনাবাহিনী পুরোপুরি পঙ্গু হয়ে যাবে। তখন হয়তো সামরিক পথ বাদ দিয়ে বিকল্প কোনো প্রস্তাব দেবে। আলোচনার আহ্বান জানাতে পারে।
প্রশ্ন: সামরিক বাহিনী যদি ২০০৮ সালের সংবিধানে ফিরে যেতে চায়, আপনারা তাতে খুশি হবেন?
সুই খার: প্রশ্নই ওঠে না। বার্মার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা সামরিক জান্তার সঙ্গে দর-কষাকষির জন্য লড়ছি না। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলার জন্য এরা আর প্রাসঙ্গিক শক্তি নয়। আমরা একটা ইউনিয়ন হিসেবে এটা গড়ে তুলব।
প্রশ্ন: তার মানে কি মিয়ানমারে কোনো কেন্দ্রীয় সেনবাহিনী থাকবে না?
সুই খার: সে রকম কেউ ভাবছে না। বার্মার একটা সেনাবাহিনী নিশ্চয়ই লাগবে। সেটা হতে হবে পেশাদার সেনাবাহিনী। সেখানে সেনাবাহিনীর ওপর অবশ্যই বেসামরিক জনপ্রতিনিধিদের প্রাধান্য থাকতে হবে।
প্রশ্ন: যুক্তরাষ্ট্রে বার্মা-অ্যাক্ট পাস হওয়ার পর জান্তাবিরোধীরা বেশ আশাবাদী ছিল। বার্মা-অ্যাক্ট কি চলমান সংঘাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে?
সুই খার: বার্মায় যারা জান্তার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করছে, তারা আশা করেছিল, আগে-পরে বার্মা-অ্যাক্ট বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু মাঠপর্যায়ে এর কোনো বাস্তবায়ন দেখা যায়নি। যুক্তরাষ্ট্র হয়তো ভাবছে, গণচীন এতে প্রতিক্রিয়া দেখাবে। কিন্তু জান্তা যখন ভেঙে পড়ছে, তখন বার্মা-অ্যাক্টের বাস্তবায়ন ভালো ভূমিকা রাখত।
প্রশ্ন: ভারতকে এখনো মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও জান্তা সরকারের ওপর আস্থা রাখতে দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনাদের মূল্যায়ন কী?
সুই খার: ভারতের একজন সাবেক জেনারেল বলেছেন, বার্মার মিলিটারি তাঁদের জন্য কোনো সমস্যা করছে না। এনএলডি সমস্যা করছে। তাঁর এই বক্তব্য ঠিক নয়। তাঁরা হয়তো এখনো জেনারেল মিন অং হ্লাইয়ের ওপর ভরসা করছেন। আমি মনে করি না ভারত মিন অং হ্লাইকে শেষ পর্যন্ত সমর্থন করে যেতে পারবে। তাদের অবস্থান বদলাতে হবে।
প্রশ্ন: ভারত সীমান্তে প্রাচীর দেওয়ার কথা বলছে। এ ব্যাপারে আপনার মতামত কী?
সুই খার: তারা সেটা করতে পারে। কিন্তু মনে রাখতে হবে, মিজোদের সঙ্গে আমাদের রক্তের সম্পর্ক। সীমানাপ্রাচীর আমাদের চলাচল বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। প্রাচীর কোনো অপশন হতে পারে না। ভারতকে বিকল্প ভাবতে হবে।
প্রশ্ন: আপনারা বিভিন্ন সময় বলেছেন, কুকি জনজাতি মিয়ানমার, ভারত ও বাংলাদেশজুড়ে আছে। অনেক সময় ‘বৃহত্তর কুকিল্যান্ড’ বলে একটা শব্দ শোনা যায়। আপনারা কি সে রকম কিছু বিশ্বাস করেন?
সুই খার: আমরা বর্তমান অবস্থায় আছি ১০০ বছরের বেশি সময়। অতীতের অনেক কিছু এখন পাল্টে গেছে। বর্তমানে আমরা যে যেখানে আছি, তাতে আমরা অভ্যস্ত। সুতরাং সেরকম রকম কিছুর সম্ভাবনা বেশ ক্ষীণ।
প্রশ্ন: আপনাদের অঞ্চলের ভেতর দিয়ে ভারতে উদ্যোগে ত্রিদেশীয় (ভারত-মিয়ানমার-থাইল্যান্ড) যে যোগাযোগব্যবস্থা গড়ে উঠছিল, তার ভবিষ্যৎ কি যুদ্ধের কারণে হুমকির মুখে পড়ল?
সুই খার: আমরা এই অঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। এটারও বিপক্ষে নই। তবে ভারতের বার্মা নীতি পর্যালোচনা করতে হবে। তারা শুধু নেপিডোর সঙ্গে কথা বললে হবে না। অন্য শক্তিগুলোর সঙ্গেও কথা বলতে হবে, যদি তারা মিয়ানমারে প্রকৃতই তাদের সব প্রকল্প এগিয়ে নিতে চায়।
প্রশ্ন: চীন আন্তর্দেশীয় যে যোগাযোগব্যবস্থা গড়তে চাইছে, যাতে মিয়ানমারও আছে। অন্যদিকে, ভারত তাতে যুক্ত হয়নি। তাদের এই ভিন্ন অবস্থান মিয়ানমারে কি কোনো সংঘাত সৃষ্টি করছে?
সুই খার: দক্ষিণ এশিয়া এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বার্মার যে ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব, সেটা আসলে আমাদের জন্য সৌভাগ্য না দুর্ভাগ্যের কারণ, এ বিষয়ে আমিও ভেবে কূলকিনারা পাই না অনেক সময়। মিয়ানমারকে ঘিরে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর একটা প্রতিযোগিতা আছে। আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো এ অবস্থায় কী ভূমিকা রাখব এবং এ থেকে কী ধরনের সুবিধা আদায় করে নিতে পারব, সেটা ঠিক করা।
প্রশ্ন: পালেতোয়াকে আপনারা চিন প্রদেশের অংশ বলছেন, কিন্তু আরাকানিরা এখন এটা নিয়ন্ত্রণ করছে। এ নিয়ে সিএনএফ কি আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাতে জড়াবে?
সুই খার: আমরা একক শত্রু বার্মিজ আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছি। পালেতোয়া চিন প্রদেশের অংশ, আরাকানের নয়। আরাকান আর্মিকে বুঝতে হবে, তারা অন্যের ভূমিতে রয়েছে। আরাকান আর্মি এই শহর থেকে সরে না গেলে তা হবে অবৈধ দখল।
প্রশ্ন: আপনারা কি আরাকান আর্মির সংগ্রামকে সমর্থন করছেন না?
সুই খার: সমর্থন করছি। কিন্তু তাদের বুঝতে হবে, অন্যের ভূমি দখল করে রাখা ঠিক নয়।
প্রশ্ন: সিএনএফ কি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের একটা নিজস্ব জাতিসত্তা মনে করে?
সুই খার: রোহিঙ্গারা বার্মার স্বাধীন হওয়ার বহু আগে, শত শত বছর ধরে আরাকানে রয়েছে। তারা কাউকে তাড়িয়ে সেখানে বসতি গড়েনি। আমরা রোহিঙ্গাদের আরাকানের নিজস্ব জাতিসত্তাই মনে করি।
প্রশ্ন: সিএনএফ বা এনইউজির তরফ থেকে কি কখনো আপনাদের সংগ্রামের বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছিল?
সুই খার: আমরা একসময় যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলাম; বিশেষ করে ২০২১-এ জান্তার বিরুদ্ধে বিপ্লবী আন্দোলন শুরুর পর। আমরা তো চাইবই বাংলাদেশ সরকার আমাদের সমর্থক দিক।