মূল্যবান ফসল জিরা চাষ করে নওগাঁয় ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন কৃষক জহুরুল ইসলাম। তিনি বাড়ির পাশে ৮ শতক জমিতে জিরা চাষ করেছেন। তার জিরা চাষ দেখে স্থানীয় অন্য কৃষকদের মধ্যেও আগ্রহ বাড়ছে।
নওগাঁর রানীনগরের শিয়ালা গ্রামের কৃষক জহুরুল ইসলাম। তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করে থাকেন।
বাজারে দাম বেশি হওয়ায় জিরা চাষে উদ্বুদ্ধ হন। অনলাইনে জিরা চাষাবাদ পদ্ধতি দেখতে শুরু করেন। অনেক চেষ্টা করে অনলাইনের মাধ্যমে ভারত থেকে ১২০০ টাকা খরচ করে ৫০০ গ্রাম জিরা বীজ সংগ্রহ করেন। এরপর স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে ৮ শতক জমিতে এই জিরা বীজ রোপণ করেন। বর্তমানে জিরা গাছে ফুল ও জিরা এসেছে। গাছে যতগুলো ফুল, ততগুলোই জিরা ধরছে। ৮ শতক জমি থেকে ১০ থেকে ১২ কেজি জিরা পাওয়া যাবে। বাজারে জিরার দাম ভালো থাকায় বাজারমূল্যে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা।
কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, বীজ বপনের তিন থেকে সাড়ে তিন মাস সময় লাগে জিরা ঘরে উঠতে। জিরা চাষে অনেকটা সফল হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝেও এর আগ্রহ বাড়ছে। প্রথমে বীজ সংগ্রহের পর পানিতে ৩০টি জিরা বীজ ভিজা টিস্যুর মধ্যে রেখে পরীক্ষা করি, কী পরিমাণ গাছ গজাবে। পরে ৩০টির মধ্যে ২৬টি গাছ উঠে গেছে। তখন ৮ শতক জমি হালচাষ ও সার ছিটিয়ে বীজ রোপণ করি। বীজ রোপণের ৮ থেকে ১০ দিনের মধ্যে জিরা গাছ উঠতে শুরু করে। পরে বৃষ্টির কারণে কিছু গাছ নষ্ট হয়ে যায়। বাকি গাছগুলো ভালো করে যত্ন নেওয়া শুরু করি।
তাতে জিরা চাষ একটি লাভজনক ফসল মনে হয়েছে। তবে জিরা চাষ শীতকালে ভালো হয়। আগামীতে আরও বড় পরিসরে জিরা চাষাবাদের পরিকল্পনা করছেন তিনি।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, জহুরুল ভাই নতুন ফসল জিরা চাষ করেছেন। জিরা চাষ ইতিপূর্বে আমরা কখনো দেখিনি। প্রথম হলেও খুব সুন্দর তার জিরার গাছ হয়েছে। বাজারে জিরার দাম ভালো। চিন্তা করছি তার দেখাদেখি আমরাও জিরা চাষ করব এবং জিরা চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, জহুরুল ইসলাম উদ্যোগী একজন কৃষক। তিনি নতুন ফসল হিসেবে জিরা পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেছেন। তার জিরা চাষ কৃষি বিভাগ সার্বক্ষণিক নজরে রেখেছে। আমরা শেষ পর্যন্ত এটার ফলন কেমন হয় দেখব। তিনি জিরা চাষে সফল হলে উঠান বৈঠক, সভা, সেমিনার করে অন্য কৃষকদের জিরা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হবে।
পূর্ববর্তী পোস্ট