দারচিনি এমন একটি ভেষজ, যার ঔষধি গুণাগুণের জন্য হাজার হাজার বছর ধরে মানুষ বিভিন্ন রোগব্যাধি নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে আসছে। প্রাচীন মিসরীয়রা শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ দূরীকরণ মলম তৈরি থেকে শুরু করে মমি সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায়ও দারচিনি ব্যবহার করত। রোমানদের কাছে এটি একটি পবিত্র ভেষজ হিসেবে পরিচিত ছিল। যে কারণে তারা মৃতদেহ পোড়ানোর সময় দারচিনি ব্যবহার করত।
দারচিনিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি রেডিকেলস দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে। জেনে নিন দারচিনির স্বাস্থ্য-উপকারিতা…
রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়
দারচিনি শরীরে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমায়। ফলে রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য মতে, দারচিনি রক্তে শর্করার মাত্রা ১০ থেকে ২৯৮ শতাংশ পর্যন্ত কমায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
দারচিনিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি প্রোপার্টি, যা শরীরে শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম গড়ে তোলে। এতে থাকা সিনেমালডিহাইড নামের উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
দারচিনি শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এর অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি প্রোপার্টি ধমনিতে রক্ত চলাচল ঠিক রাখে।
ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে।
পরিপাকে সহায়তা
দারচিনি বমি বমি ভাব দূর করার পাশাপাশি পেটের অস্বস্তিবোধ কমায়। ফলে পরিপাকে সহায়তা করে।
গর্ভধারণের সুযোগ বাড়ায়
দারচিনিতে থাকা উপাদানগুলো নারীদের ওভালুশান প্রক্রিয়ার হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে। ফলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
ভালো ফলাফল পেতে প্রতিদিন দারচিনি পানি খেতে পারেন।
পিসিওএস নিয়ন্ত্রণে রাখে
পলি সিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম বা পিসিওএস নারীদের হরমোন উৎপাদন সংক্রান্ত একটি রোগ। এর ফলে অনিয়মিত ঋতুচক্র, ওজন বৃদ্ধি ও চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। দারচিনিতে থাকা সিনেমালডিহাইড পিসিওএসে আক্রান্ত নারীদের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের পরিমাণ কমায়। ফলে হরমোন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
খাদ্যতালিকায় চাসহ অন্যান্য পানীয় হিসেবে কিংবা তরকারি বা স্যুপে দারচিনি ব্যবহার ভালো ফল দিতে পারে।
পূর্ববর্তী পোস্ট