কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের এপারে রাখাইন থেকে থেমে থেমে ভেসে আসছে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ। মিয়ানমার জলসীমায় নাফ নদীতে দেশটির নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ টহল দিতে দেখা গেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের বাসিন্দা নাসির উদ্দীন বলেন, শনিবার ভোর থেকে মিয়ানমার থেকে মর্টারশেল বিস্ফোরণের বিকট শব্দ আধা ঘণ্টা পরপরই এপারে ভেসে আসছে। দুপুর পর্যন্ত এ শব্দ শোনা যাচ্ছে। যখন বিস্ফোরণ হয়, তখন বাড়ি-ঘর কেঁপে উঠে।
তিনি জানান, এর আগের দুইদিনও বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসার পাশাপাশি মিয়ানমার নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধ জাহাজ তাদের জলসীমায় টহল দিতে দেখা গেছে। শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত থেকে এ দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। শনিবার সেটি আর দেখা যায়নি।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা খায়রুল আমিন বলেন, মিয়ানমারে বিস্ফোরণ হলে দ্বীপের এপারে শব্দ শোনা যায়। রাতের বেলায় শব্দ বেশি শোনা যায়, দিনের বেলায় কম। গত তিনদিন ধরে থেমে থেমে বিকট শব্দ এপারে ভেসে আসছে।
তিনি বলেন, দ্বীপের অধিকাংশ জেলে সাগরে মাছ ধরতে যায়। তারা মাছ ধরতে গেলেও ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে থাকেন। যেহেতু রাখাইন রাজ্য যুদ্ধ চলমান।
সূত্রে জানা গেছে, মিয়ানমারের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইন অঞ্চল দখল করতে জান্তা বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে চালিয়ে যাচ্ছে। গত দুই মাসে আরাকান আর্মি রাখাইনে হামলা চালিয়ে জান্তা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে রাখাইনের অধিকাংশ অঞ্চল, বিজিপির ক্যাম্প, সীমান্ত চৌকি ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ তাদের হেফাজতে নিয়েছে।
আরকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যে রাখাইনের জেলা শহর আকিয়াব ও রাছিটং উপজেলা শহর মংডুর ও বলি বাজারের গ্রামে এখনো দু’পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। এসব উপজেলা শহরের মধ্যে মংডুর সেনা ক্যাম্প ও বলি বাজারের সেনা ক্যাম্প দখল করতে আরাকান আর্মি ব্যাপক হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, অপরদিকে জান্তা বাহিনীও এসব সেনা ক্যাম্প নিয়ন্ত্রণ রাখতে পাল্টা আক্রমণ করছে। দেশটির জান্তা সেনারা তাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়া রাখাইন অঞ্চল, সীমান্ত চৌকি ও বিজিপির ক্যাম্প পুনরুদ্ধার করতে তাদের জলসীমানায় নাফ নদীতে গত দুইদিন ধরে যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে টহল দিচ্ছে। তবে এ জাহাজ থেকে কোনো হামলা এখনো করেনি জান্তার সেনারা।
টেকনাফ ২-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনের পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় বিজিবি সবসময় সর্তক রয়েছে।
পূর্ববর্তী পোস্ট