যাত্রার প্রথম দিনে ভারত থেকে ১২ যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে ৪০৯ আসনের ‘মিতালী এক্সপ্রেস’। বুধবার (১ জুন) নীলফামারীর চিলাহাটি দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ট্রেনটির চলাচল শুরু হয়। নয়াদিল্লি থেকে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ২৫ মিনিটে ট্রেনটির ভার্চুয়াল ‘ফ্ল্যাগ অফ’ করেন বাংলাদেশের রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন ও ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ১২ জন যাত্রী নিয়ে ভারতের শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। দুপুর ২টা ১০ মিনিটে নীলফামারীর চিলাহাটিতে এসে পৌঁছায়। সেখানে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায় ২টা ৪৫ মিনিটে।
জানা গেছে, ৪০৯ আসনের ট্রেনটি ১২ জন যাত্রী নিয়ে ভারত থেকে ছেড়ে এসেছে। চিলাহাটিতে ৩৫ মিনিটি বিরতি দিয়ে চালক ও সহকারী পরিবর্তন করে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়েছে মিতালী এক্সপ্রেস। ১২ যাত্রীর মধ্যে চার জন বাংলাদেশি ও আট জন ভারতীয় নাগরিক।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ২৩ মে থেকে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার ময়নুল হেসেন বলেন, ‘পাসপোর্ট ও ভিসা দেখে টিকিট সরবরাহ করছে রেল কর্তৃপক্ষ। ভারত থেকে মিতালী এক্সপ্রেসটি বাংলাদেশে নিয়ে আসেন লোকো মাস্টার (চালক) কৌশিক ঘোষ, সহকারী লোকো মাস্টার রঞ্জন কুমার মিজরা ও বিবেকানন্দ চৌধুরী। অপরদিকে, বাংলাদেশি রেকে করে চিলাহাটি থেকে লোকো মাস্টার শরিফুল ইসলাম, সহকারী লোকো মাস্টার শাহাজান আলী, গার্ড সহিদুল ইসলাম ও সহকারী গার্ড হাসান ইমাম ট্রেনটি ঢাকার দিকে নিয়ে যায়।’
ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি থেকে সপ্তাহের রবি ও বুধবার এবং ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার চলাচল করবে। জলপাইগুড়ি থেকে নিয়মিতভাবে ছাড়বে দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে এবং ঢাকায় পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১০টায়। আবার ঢাকা থেকে ছাড়বে রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ও ভারতে পৌঁছাবে সকাল ৭টা ৫মিনিটে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক অসিম কুমার তালুকদার জানান, ট্রেনটিতে এসি বাথে চার হাজার ৯০৫, এসি সিটে তিন হাজার ৮০৫ ও এসি সাধারণ আসনে দুই হাজার ৭৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচ বছর পর্যন্ত অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের নীলফামারীর চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ি রেলপথে ১৯৬৫ সালের ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দার্জিলিং মেইল ট্রেন চলাচল করেছিল। এরপর পাক-ভারত যুদ্ধের সময় তা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘ ৫৭ বছর পর এই রেলপথে পুনরায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ২০২১ সালের মার্চে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। তবে করোনা ধাক্কার কারণে ট্রেনটি চালু হতে দেরি হলো।