নারী হোক বা পুরুষ সকলেরই সৌন্দর্যের প্রধান অনুষঙ্গ চুল। কত কবিতা কত গান রচিত হয়েছে এই চুল নিয়ে। চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নেশা… খোলা চুলে হেঁটে যাওয়া কোন তরুণী দেখলে মনের অজান্তেই জীবনানন্দ দাশের এই কবিতার মাঝে ডুবে যাই। আর চুলের সৌন্দর্য বর্ধনে নানা রকম হেয়ার কাটার স্টাইল আবিস্কৃত হয়েছে। বিভিন্ন টাইপের চুল কাটার রয়েছে বিভিন্ন নাম। মুখাবয়বের উপর নির্ভর করে এসব চুল কাটার ডিজাইন।
এছাড়াও হেয়ার কাটিংয়ের মাধ্যমে সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্ব যেমন ফুটিয়ে তোলা যায় তেমনি বয়সও কমিয়ে ফেলা যায় নিমিষেই। মানানসই চুলের স্টাইলে চলে আসতে পারে মার্জিত ভাবও। অনেকেরই পছন্দ একটু ঢেউ খেলানো দীঘল কালো চুল, কারও হয়ত পছন্দ ছোট ছাঁচে ছাঁটা একটু কোঁকড়ানো চুল। এক্ষেত্রে অবশ্যই মাথায় রাখা প্রয়োজন, নিজের মুখের শেপ বা ধরন। তাই কোন বিখ্যাত সেলিব্রিটিকে দেখে ঝোঁকের মাথায় তার মতো হেয়ারস্টাইল করলে হয়ত আপনাকে অসুন্দরও দেখাতে পারে। তাই নিজে না বুঝলেও কোন বিউটিশিয়ানের সঙ্গে পরামর্শ করে ঠিক করুন আপনাকে কোন কাটে ভাল মানাবে।
আটপৌরে বাঙালী নারী মানেই দীঘল কালো চুল। লম্বা চুলের ধাঁচেও এখন কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। চুলের সিঁথির পরিবর্তন করেই লুক-এ পরিবর্তন নিয়ে আসা যায় সহজেই। মাঝে সিঁথির ক্লাসিক লুক আজকাল একটু কমই দেখা যায়। কাঁধ পর্যন্ত চুল রেখে এক পাশে সিঁথি করার ট্রেন্ড খুব লক্ষ্যনীয়। তবে যাদের চুল একটু ঘন, তারা চুলগুলো একটু ফুলিয়ে নিয়ে পেছনের দিকে টেনে হেয়ার ক্লিপ দিয়ে আটকে রাখতে পারেন সহজেই। আর যারা টিনএজার, তারা হেয়ার ব্যান্ড ব্যবহার করে পনিটেইল করলেও ভালো লাগবে। এছাড়া লম্বা চুলের লেন্থ-এ ভিন্নতা নিয়ে আসতে পারেন লেয়ার কাটিং-এর মাধ্যমে। পছন্দ এবং স্টাইল অনুযায়ী লেয়ার, ব্যাংস, ভলিউম লেয়ার, স্টেপ কাট সম্পর্কে জেনে নিয়ে আপনাকে যে কাটে মানাবে সেভাবে চুল কাটুন। বাড়তি সৌন্দর্যের জন্য চুল কালারও করা যেতে পারে।
ছোট চুল কাটায় স্টাইল
ববকাট মানেই শত রকমের এক্সপেরিমেন্ট। মুখের শেপ-এর সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে আপনিও ট্রাই করতে পারেন বিভিন্ন ধরনের ববকাট। এক্ষেত্রে একটু গোলগাল মুখের মেয়েদের জন্য এ-লাইন ববকাট হতে পারে পারফেক্ট। এ-লাইন ববকাটের জন্য সামনের দিকে প্রায় থুতনি পর্যন্ত চুল রেখে পেছনের দিকে কিছুটা ছোট করে চুল কাটতে হবে। আউটলুক অনুযায়ী কখনও মাঝ বরাবর আবার কখনও একটু পাশে সিঁথি করে আনতে পারেন ভিন্নতা। সামনের দিকের চুলগুলো প্রায় কাঁধ পর্যন্ত লম্বা রেখে পেছনের চুলগুলো বেশ খানিকটা ছোট করে বাজ কাটও ট্রাই করতে পারেন। যেহেতু সামনের দিকের চুলগুলো তুলনামূলকভাবে বড় থাকে, তাই একটু ব্যাংস করে হেয়ার স্টাইলে আনতে পারেন নিজস্বতা।
যারা খুব বেশি এক্সপেরিমেন্ট-এর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না, তারা শোল্ডার লেন্থ বব কাট অর্থাৎ কাঁধ পর্যন্ত সমান করে ছেঁটে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে খুব বেশি লেয়ার ব্যবহার না করে, চুলগুলো একদম সোজা রাখাটাই ভাল। আর ভিন্নতা নিয়ে আসুন আপনার সিঁথি কোন পাশে করছেন তার উপর ভিত্তি করে। চাইলে আরও একটু ছোট করে থুতনি পর্যন্ত ছেঁটে নিয়ে চিন লেন্থ বব কাট হেয়ার স্টাইলও ট্রাই করে দেখতে পারেন, যদি আপনার মুখায়ব একটু লম্বাটে হয়ে থাকে। শোল্ডার লেন্থ বব কাটের পর কাঁচি দিয়ে কিছুটা এলোমেলোভাবে কেটে ট্রাই করুন শ্যাগি বব। তবে খেয়াল রাখবেন, অবিন্যস্তভাবে ছাঁটতে গিয়ে কোথায় যেন খুব বেশি ছোট অথবা খুব বেশি বাঁকা না হয়ে যায়। শ্যাগি বব-এর জন্য চুলের ডিজাইন একটু ফুলিয়ে রাখতে পারলে সুন্দর লাগবে।
একদম ছোট চুলের পিক্সি হেয়ার স্টাইলের ট্রেন্ড ৯০ দশকে শুরু হলেও, ইদানীং তা আবার ফ্যাশন-এ পরিণত হয়েছে। যাদের মুখাবয়ব একটু ছোট ধাঁচের, তাদের পিক্সি হেয়ার স্টাইলে বেশ মানিয়ে যায়। হেয়ার স্টাইল যেটিই হোক, অবশ্যই এক্সপার্ট বিউটিশিয়ানদের কাছ থেকেই করাবেন।
প্রয়োজনে চুল কাটা শুরু করার আগেই হেয়ার এক্সপার্ট-এর সঙ্গে আপনি যেই স্টাইলটি করতে চাইছেন তা নিয়ে আলোচনা করে নিন। সেই স্টাইলে আপনাকে মানাবে কি না অথবা তার কোন সাজেশন থাকলে সেটিও জেনে নিন।