মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়াতে পারে। সংস্থাটি জানায়, স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮। ভূমিকম্পটি যখন আঘাত হানে, তখন বেশির ভাগ মানুষই ঘুমে ছিল।
খবর অনুসারে, এর আগে ১৯৩৯ সালের ডিসেম্বরে তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ওই সময় ৩০ হাজার মানুষের প্রাণহাণি ঘটে।
ইউএসজিএসের অনুমান, ৪৭ শতাংশ সম্ভাবনা আছে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার থেকে ১০ হাজারে পৌঁছাবে এবং ২০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে ১০ হাজার থেকে ১ লাখে পৌঁছাবে। ভূমিকম্প সংঘটিত অঞ্চলের ঐতিহাসিক ভূমিকম্পের মডেল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা এই অনুমান করেছে।
এক রিপোর্টে ইউএসজিএস বলেছে, ব্যাপক হতাহত এবং বিশাল ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। দুর্যোগের প্রভাব সুদূরপ্রসারী হবে।
রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এই অঞ্চলের বাসিন্দারা যে ধরনের বাসভবনে বসবাস করেন তার গঠন খুবই দুর্বল। এই ভূমিকম্পে তুরস্কের অর্থনৈতিক ক্ষতি হতে পারে ১ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত।
সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সিরিয়া ও তুরস্কে অন্তত ১ হাজার ৩০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ক্রমেই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিসিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভূম্পিকম্পে তুরস্কে ৯১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া ৫ হাজার ৩৮৩ জন আহত হয়েছে। ভবনে আটকে পড়াদের বের করে আনার চেষ্টা করছে উদ্ধারকর্মীরা। তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেইমন সইলু বলেন, ‘ভূম্পিকম্পে ১০টি শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- গাজিয়ানতেপ, কাহরামানমারাস, হাতায়, ওসমানিয়ে, আদিয়ামান, মালাতিয়া, সানলিউরফা, আদানা, দিয়ারবাকির এবং কিলিস। প্রতিবেশী দেশ সিরিয়া, লেবানন এবং সাইপ্রাসেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।’
এরই মধ্যে দেশটির সরকার ‘লেভেল-৪ সংকেত’ দিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে। এর সঙ্গে আন্তর্জাতিক সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে।দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে ইতোমধ্যে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্পে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে এক টুইট বার্তায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব আমরা একসঙ্গে এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠবো। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় তাৎক্ষণিক অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠানো হয়েছে। এছাড়া অন্য ইউনিট সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।’