Home » তাঁদের চোখেমুখে স্বপ্নজয়ের বিস্ময়

তাঁদের চোখেমুখে স্বপ্নজয়ের বিস্ময়

0 মন্তব্য 218 ভিউজ

ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ১টা ৩৯ মিনিট। ঢাকার বুকে স্বপ্নযাত্রার অপেক্ষা। বাজল হুইসেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক যাত্রার পতাকা নাড়িয়ে দিলেন। চালকের আসনে আসমা আক্তার। তিনিই প্রথম ঘুরালেন মেট্রোরেলের চাকা। যে ট্রেনে ছিলেন না কোনো যাত্রী। এর পর এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। পরের ট্রেনে প্রথম যাত্রী হিসেবে পা রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা। তাঁদের সঙ্গী ছিলেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ক্ষণে সবাই আনন্দে আত্মহারা। ঘড়ির কাঁটায় যখন ঠিক দুপুর ১টা ৫৩ মিনিট, তখন বেজে উঠল হুইসেল। এ স্বপ্নযাত্রায় চালক মরিয়ম আফিজা অংশ হলেন ইতিহাসের। তাঁর চোখেমুখে তখন বিস্ময়। বললেন, জীবনে সেরা মুহূর্ত। এ ঘটনা নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথকে আরও দৃঢ় করবে। ইতিহাসের অংশ হতে পেরে তিনি গর্বিত।

‘ট্রেন অপারেটর’ হিসেবে ২০২১ সালের নভেম্বরে নিয়োগ পাওয়া মরিয়ম আফিজা বলেন, দেশবাসী স্বপ্ন দেখেছিল। সেই স্বপ্ন আজ বাস্তব। এ জন্য সবাই গর্বিত। তবে তাঁর গর্বের জায়গাটা একটু ভিন্ন। কারণ, মেট্রোরেলের যে যাত্রার চালক ছিলেন তিনি, সেখানে যাত্রী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম যাত্রায় তাঁকে চালক হিসেবে বেছে নেওয়ায় সংশ্নিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান তিনি। মাত্র ১৭ মিনিটে দিয়াবাড়ী থেকে আগারগাঁও স্টেশনে পৌঁছায় প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী মেট্রোরেল। চালকের আসনে বসার প্রতিটি সেকেন্ডই মরিয়ম আফিজার কাছে ইতিহাসের পাতায় লেখা একেকটি অক্ষর যেন।

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের হাত ধরে আমাদের যানজটের যে অভিশাপ, তা থেকে আমরা মুক্তি পেতে পারি। সব মিলিয়ে আমি খুবই আনন্দিত। ‘

নারী হয়ে এ পেশায় আসাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং। এটি পরিবার-পরিজন কীভাবে দেখছে- এমন প্রশ্নে মরিয়ম বলেন, ‘আমি যখন এ কাজে যোগ দিই, ওই সময় সবাই আমাকে সাহস দিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কঠিন কোনো সমস্যায় পড়িনি। আমাদের দেশে নারীরা তো সব সেক্টরে আছে। যুদ্ধবিমান থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক বিমান চালানো, ট্রেন চালানো- সব সেক্টরে মেয়েদের অবদান আছে। এই মেট্রোরেল চালানোটাও খুব কঠিন বা চ্যালেঞ্জিং কিছু না। আশা করছি, ভালো কিছু দিতে পারব। নারী হিসেবে নয়, বরং মেট্রোরেলের একজন কর্মী হিসেবেই কাজ করছি।’

প্রধানমন্ত্রীর পতাকা নাড়িয়ে প্রথমে যে ট্রেনটি উদ্বোধন করেন, সেই ট্রেনের চালকও ছিলেন নারী। যিনি স্টেশন কন্ট্রোলার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তাঁর মূল দায়িত্ব স্টেশন থেকে ট্রেন পরিচালনায় যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করা। তবে তিনি চালকের আসনেও বসতে পারবেন। প্রথম দিন তিনি তাই করেছেন।

আসমা আক্তার রাজধানীর তিতুমীর কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন। একই বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্টেশন কন্ট্রোলার পদে নিয়োগ পান ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট। আসমা বলেন, ‘এটা আসলেই একটা রোমাঞ্চকর ব্যাপার। এ কাজে আসতে প্রথমে আমার অনেক কৌতূহল জেগেছিল। যখন বিজ্ঞপ্তিতে দেখি- মেট্রোরেল একটা আধুনিক প্রযুক্তি, দেশে প্রথম এবং সবার জন্য একটা স্বপ্ন, তখন আবেদন করি। অনেক ধরনের পরীক্ষা হয়েছে আমাদের। তার পর নিয়োগপত্র পাই। এর পর সব প্রশিক্ষণ শেষ করেছি। আমাদের যে স্বপ্ন ছিল, আমরা একটা ডিজিটাল ট্রান্সপোর্টের দিকে যাব, তার একটি অংশ হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’

আরও পড়ুন

মতামত দিন

আমাদের সম্পর্কে

We’re a media company. We promise to tell you what’s new in the parts of modern life that matter. Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit. Ut elit tellus, luctus nec ullamcorper mattis, pulvinar dapibus leo. Sed consequat, leo eget bibendum Aa, augue velit.